কিভাবে ফেসবুক আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?
আসক্তি নিয়ে কিছু কথা
পৃথিবীতে গড়ে মানুষ দিনে ১৫০ থেকে ২০০ বার মুঠোফোন দেখেন, হয়তো কল করেন, ওয়েব ব্রাউজ করেন, ফেসবুকে কিছু পোস্ট করেন,ইউটিউব দেখেন,কিংবা শুধুই অভ্যাসের বশে পকেট থেকে বের করে সময় দেখে, আবার কেউ কেউ বিনা কারণে হাতের মুঠোয় ফোন রেখে দেন।আসলে মুঠোফোন ব্যবহার করা টা এখন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় আসক্তি। আর তার মধ্যে হচ্ছে ফেসবুক আসক্তি। ফেসবুক হল সময় অতিবাহিত করার, বন্ধু বানানো এবং কিছুটা শিথিল হওয়ার একটি ভাল উপায়। তবে আপনি কি ভেবে দেখেছেন যে আপনি যদি ফেসবুকে বেশি সময় ব্যয় করছেন এবং এটি আপনার জীবনকে ব্যাহত করছে।
আরো পড়ুনঃ ফেইসবুকে আজাইরা সময় নষ্ট না করে, কিভাবে সেই সময়টাকে কাজে লাগানো যায়?
এই আসক্তি মানুষের বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি করে থাকে। আজ আপনাদের আমরা জানাবো এবং তুলে ধরব কিভাবে ফেসবুক বা স্মার্টফোন আসক্তি থেকে দূরে এবং মুক্তি পেতে পারেন। আপনারা যদি নিচের আমার দেওয়া কিছু টিপস গুলো মানেন তাহলে ইনশা্ল্লাহ আপনাদের অনেকটা উপকার হতে পারে ।
কি করলে ফেসবুকে বেশি সময় থেকে কাটানো মুক্তি পাওয়া যাবে?
১। ফেসবুক অ্যাপটি আন ইনস্টল করে রাখুন। অন্য কোনো ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করুন। প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হলে লগআউট করে রাখুন। ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি বড় আকারের দিবেন এবং ব্রাউজারে ফেসবুক পাসওয়ার্ড সেভ করবেন না। এতে করে বার বার পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে আপনার ভালো লাগবেনা। অ্যাপ না থাকার কারনে ফেসবুক ব্যবহার করে মজা পাবেন না। ফলে ফেসবুকের প্রতি আসক্তি কমে যাবে। অথবা আরেকটি কাজ করতে পারে ফেসবুকটি ডিলিট করে রাখতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ফেইসবুকে আজাইরা সময় নষ্ট না করে, কিভাবে সেই সময়টাকে কাজে লাগানো যায়?
২। বন্ধু সংখ্যা সীমিত রাখুন কেননা অপরিচিত কোনো ব্যক্তির সাথে চ্যাট শুরু করলে আসক্তি আরো বেড়ে যাবে তাই অপরিচিত ব্যাক্তির সাথে আজে-বাজে কথা বলে সময় নষ্ট করবেননা। নতুন নতুন বন্ধু বানানোর প্রবনতা থেকে বেরিয়ে আসুন।
৩। যে গ্রুপ বা পেজের পোস্ট আপনাকে বেশি আকর্ষিত করে সেগুলোর নোটিফিকেশন আপাতত বন্ধ করে রাখুন। সেলিব্রিটিদের অবশ্যই আনফলো করবেন । ওনারা প্রাপ্ত বয়স্ক দেহে শিশু মস্তিষ্ক । আপনার মস্তিষ্ককে বিষক্রিয়া করতে একজন সেলিব্রিটি যথেষ্ট ।ঐ সব পেইজ বা গ্রুপ আনফলো করে দূরে থাকুন।
৪। ফেসবুককে ব্যবহার করবেন বিকেলে একটু পাড়া ঘোরার মতো । এর চেয়ে বেশি করলে সারাদিন পাড়া ঘুরে যে লাভ, ওই একটুকরো বিকেলে ঘুরে একই লাভের চেয়ে বেশি কিছু পাবেন না । বিনিময়ে কেবল সময় নষ্ট করবেন । মনে রাখবেন, ফেসবুক আপনার এই সময় বিক্রি করে বছরে একশো বিলিয়ন ডলারের বেশি কামায়, কিন্তু আপনার পকেটে কিছু আসে না ।
৫। ফেসবুকের ভিডিও গুলো দেখবেন কম । রান্না বা দৈনন্দিন কোনো টিপস জাতীয় লাইফ হ্যাক ভিডিও থাকলে দেখবেন সে গুলো, কিভাবে জীবনটাকে সহজ করা যায় । কারো ভিডিও ভ্লগ দেখার কিছু নেই, ওসব তাদের দৈনন্দিন অপকর্মের তালিকা ।
আরো পড়ুনঃ একটি YouTube চ্যানেল শুরু করার জন্য 10 টি টিপস
৬। বর্তমানে নিজের অন্য কোন কোন কাজগুলো করা খুবই দরকার সেগুলোর তালিকা করে সময় মত করুন নিজেকে ব্যাস্ত রাখুন এবং একটা একটা করে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।
৭। পরিবার বা আপনজনদের সময় দিন। বিশেষ করে পিতামাতার কাজে সহায়তা করুন। তাদের সাথে একটু গল্প, কথাবার্তা বলার মাত্রা বাড়িয়ে দিন। মানুষ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে বা অযথা অন্যের সাথে সময় কাটাতে যেয়ে জীবনের পরম পাওয়াঃ বাবা- মাকেই সময় দিতে পারেনা। এটি খুবই দুঃখজনক৷ মা রান্না করার সময় আপনি পাশে বসে একটু গল্প করে দেখুন, অনেক ভালো লাগবে।
৮। নিয়মিত সকালে শারিরীক ব্যায়াম করুন।
৯। ২/৩ টা গাছ লাগান এবং সেগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করুন।
১০। গল্প, নাটক বা উপন্যাস পড়ুন (অবশ্যই হার্ড কপি থেকে পড়তে হবে )।
১১। সম্ভব হলে এলাকার বা পাশের বয়স্ক ব্যক্তিদের সাথে সময় কাটান। তাঁদের জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো শুনুন এবং সেখান থেকে শিক্ষা নিন।
১২। সব থেকে বড় কথা, নিজের ভালোর জন্য শুধু ফেসবুক কেনো, জীবনের আরো অনেক ভালোলাগার জিনিসগুলোকেও ছাড়তে হবে। এই কঠিন সত্যকে মেনে নিন।
আরো পড়ুনঃ ফেইসবুকে আজাইরা সময় নষ্ট না করে, কিভাবে সেই সময়টাকে কাজে লাগানো যায়?
শেষে একটাই কখা বলব, পৃথিবীতে কোন কাজ সহজ নয়, বরং কাজ করতে করতে তা সহজ হয়ে যায়। তাই আপনার যদি ফেসবুক বা অন্যান্য যেকোনো আসক্তি থেকে মুক্তি ও দূরে থাকার ইচ্ছা থাকে তাহলে কেউ আপনাকে আটকে রাখতে পারবে না ।
Writter: Minhazur35